শহীদ নাফিসা হোসেন মারওয়ার: সাহসী শিক্ষার্থী, আন্দোলনের অগ্রসৈনিক
ডেস্ক রিপোর্ট: সাভারের একমাত্র নারী শহীদ ও সাহসী শিক্ষার্থী নাফিসা হোসেন মারওয়ারের কাহিনী এক অবর্ণনীয় শোকের স্মৃতি হয়ে থাকবে। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দিয়ে ৫ আগস্ট সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডে এক গুলির আঘাতে শহীদ হন। এই ১৭ বছরের তরুণী ছিল সাহসী, আত্মবিশ্বাসী এবং শিক্ষায় অগ্রণী। তার স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষে প্রবাসী মায়ের সাথে সংসারের হাল ধরার, কিন্তু সে স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি।
নাফিসা গাজীপুরের টঙ্গীর দত্তপাড়ার সাহাজুদ্দিন সরকার স্কুল এন্ড কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা আবুল হোসেন, একজন চা দোকানি, এবং মা কুলসুম বেগম কুয়েতে ছিলেন ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। শৈশব থেকেই নাফিসা ছিল সাহসী ও জেদী, যা তাকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
নাফিসার বাবা আবুল হোসেন বলেন, “আমার মেয়ে ছিল অত্যন্ত সাহসী। আমি কখনো চাইনি সে আন্দোলনে যোগ দিক, কিন্তু সে তা করেছিল।” নাফিসার শেষ ফোনালাপে তিনি বলেছিলেন, “বাবা, আমি গুলি খেয়েছি, মনে হয় আমি আর বাঁচব না, আমি ল্যাবজোন হাসপাতালে আছি, আমার লাশটা নিয়ে যেও।” এরপরই তার মৃত্যু সংবাদ আসে, যা পরিবারকে ভেঙে দেয়।
নাফিসার ছোট বোন সাফা হোসেন রাইসা বলেন, “আমার বোন খুব ভালো ছিল, অনেক আদর করত। সে আর আসবে না, আমি কোথায় পাবো তাকে?”
নাফিসার পরিবার, বন্ধু এবং সহযোদ্ধারা তার সাহসী কর্মসূচি ও বিক্ষোভ আন্দোলনের প্রতি তার অঙ্গীকারের প্রশংসা করেছে। তাঁর মৃত্যুর পর তার পরিবারের স্বপ্ন ধুলিসাৎ হয়ে যায়, আর মা কুলসুম বেগম কুয়েত থেকে এসে শোকে ভেঙে পড়েন।
নাফিসা হোসেন মারওয়া ছিল এক প্রতিভাবান, সাহসী, দেশপ্রেমিক তরুণী, যার অবদান দেশের ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় থাকবে।