৬৯ বছর বয়সে এইচএসসি পাস করে নজির স্থাপন করলেন শেরপুরের কবি কালাম

৬৯ বছর বয়সে এইচএসসি পাস করে নজির স্থাপন করলেন শেরপুরের কবি কালাম

শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার বাসিন্দা মো. আবুল কালাম আজাদ ৬৯ বছর বয়সে এইচএসসি পাস করে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) অধীনে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার চন্দ্রাবাজ রশিদা বেগম কলেজ কেন্দ্র থেকে ২.৭৭ জিপিএ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার এই অর্জন সমাজে শিক্ষার প্রতি বয়সের বাধাকে জয় করার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

গত মঙ্গলবার প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী তিনি উত্তীর্ণ হন, যা জানতে পারেন তার ছোট ছেলে আনিসুর রহমানের কাছ থেকে। আবুল কালাম জানিয়েছেন, জীবনের শেষ পর্যায়ে এসেও পড়ালেখার প্রতি তার আগ্রহ বরাবরই ছিল প্রবল। ২০২০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া থেকে তার শিক্ষাজীবনের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়। তিনি আরও বলেন, বয়স কোনো বাধা নয়; প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলে শিক্ষালাভ সম্ভব।

জানা গেছে, ‘কবি কালাম’ নামে পরিচিত এই প্রবীণ শিক্ষানুরাগী শুধুমাত্র শিক্ষার প্রতি ভালোবাসা থেকেই ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং একই স্কুলে এইচএসসি প্রোগ্রামে ভর্তি হন। প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ করলেও দ্বিতীয় সেমিস্টারটি অটোপাস পদ্ধতির আওতায় আসে, ফলে তিনি সফলতার সাথে এইচএসসি পাস করেন।

আবুল কালাম লেখালেখিতেও সিদ্ধহস্ত। তিনি গান ও কবিতা লেখেন এবং ইতোমধ্যে কয়েকটি উপন্যাস ও ছোটগল্প রচনা করেছেন। তার পাণ্ডুলিপিগুলো সযত্নে সংরক্ষিত রয়েছে।

তার এই অর্জনে খড়িয়াকাজীরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. দুলাল মিয়া ও এলাকাবাসী অত্যন্ত আনন্দিত। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেন, আবুল কালাম তাদের জন্য গর্বের প্রতীক। বয়সের সীমাবদ্ধতাকে অগ্রাহ্য করে অধ্যবসায়ের মাধ্যমে পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া সত্যিই প্রশংসনীয়।

বাউবির জামালপুরের উপপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান জানান, বাউবি বিভিন্ন বয়সের মানুষের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে, এবং আবুল কালাম আজাদ সেই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে শিক্ষার প্রতি তার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পেরেছেন।